1. dainikmagura@gmail.com : magura :
শফিকুল আলমের এই ছবি কবে কোথায় কিভাবে? | দৈনিক মাগুরা
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

শফিকুল আলমের এই ছবি কবে কোথায় কিভাবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপলোডের সময় : শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২১৯ জন দেখেছেন

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নৌকা মার্কার পোস্টারের সামনে বসে আছেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবিটি শফিকুল আলম তার ভেরিফাইড ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। সেখানে হ্যাস ট্যাগে লেখা সাকিবময়।

ফেসবুকের এই পুরনো পোস্টের স্ক্রিনশট সম্প্রতি আলোচনার ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ছবি পোস্ট করে অনেকেই দাবি করেছেন যে সেসময় এএফপির ব্যুরো চিফের দায়িত্বে থাকা সাংবাদিক শফিকুল আলম সাকিবের নির্বাচনের ক্যাম্পেইন করেছেন। আসলে ঘটনাটা কি ঘটেছিল তা নিয়ে অনুসন্ধান করেছে দৈনিক মাগুরা।

গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা ১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাকিব আল হাসান। সাংবাদিক শফিকুল আলম যে ছবিটি পোস্ট করেছিলেন সেটা তোলা হয়েছিল মাগুরা থেকেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে শফিকুল আলম ওই ছবি কবে, কোথা থেকে কেন তুলেছিলেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে গত ২৭ ডিসেম্বর সাকিব আল হাসানের নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করতে মাগুরায় আসেন তৎকালীন এএফপির ব্যুরো চিফ সাংবাদিক শফিকুল আলম। তার সঙ্গে ছিলেন এএফপির ঢাকা অফিসের আরো দুজন সাংবাদিক। তাদের সঙ্গে ছিলেন মাগুরার স্থানীয় এক সাংবাদিক।

নির্বাচন কাভার করতে এসে একটি চায়ের দোকানে সাংবাদিক শফিকুল আলম

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঐদিন সাকিব আল হাসানের বেশ কয়েকটি নির্বাচনী ক্যাম্পেইন কাভার করেন এএফপির ওই সাংবাদিকরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঐদিন এএফপির ওই দলের সঙ্গে ছিলেন মাগুরায় একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিনিধি সাংবাদিক কাজী আশিক রহমান। ছবিটি কোথা থেকে তোলা হয়েছিল এ তথ্য জানতে চাই তার কাছে। তিনি দৈনিক মাগুরাকে বলেন, ‘সাংবাদিক শফিকুল আলম ও তার দল ঐদিন সকালেই ঢাকা থেকে মাগুরাতে আসেন। ওইদিনই প্রথম সাকিব আল হাসান প্রকাশ্যে মাগুরার সাংবাদিকদের সঙ্গে মিট দা প্রেস করেন। সেখানে আমরা সবাই তাকে ইন্টারভিউ করি। ঐদিন সাকিবের দ্বিতীয় কর্মসূচি ছিল নিজনান্দুয়ালি ডিইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যুবলীগের আয়োজনে নির্বাচনী সমাবেশ। শফিক ভাইসহ আমরা ওই মাঠে আগেই পৌঁছে যাই এবং সাকিব আল হাসানের আসার অপেক্ষা করছিলাম। ওখানেই নবগঙ্গা নদীর তীরে একটি চায়ের দোকানে সাকিব আল হাসানের পোস্টারে ঠাসা ছিল। সাংবাদিক শফিকুল আলমের যে পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে ওই ছবিটি সেখানেই তোলা ছিল’।

ওইদিন সাংবাদিক কাজী আশিক রহমানের সেলফিতে এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম ও তার টিম।

ওই সাংবাদিক জানান, ঐদিন বিকেলে মাগুরা সদর উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া মাঠে ছিল সাকিবের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন। ওই ক্যাম্পেইনও ফলো করেন শফিকুল আলম ও তার দল। কাজ শেষে তারা ঢাকায় ফিরে যান।

এ ছবি নিয়ে অবশ্য নিজের ফেসবুকেও ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সম্প্রতি সাকিব আল হাসানের একটি সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়া জানানোর পর শফিকুল আলমের ওই পোস্ট আবারো আলোচনা এসেছে।

সদর উপজেলার ফুলবাড়িয়া খেলার মাঠে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলছেন সাংবাদিক শফিকুল আলম। ২৭.১২.২০২৩

প্রেস সচিব জানান, আমি জানি ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ যুগের ১৬ বছরে আমি কী করেছি! ফেসবুকে আমার যেকোনো ছবি এবং মন্তব্য খুঁজে বের করতে আপনাকে স্বাগত। আপনার কাজটি আমার স্মৃতিগুলিকে তাজা করতে সাহায্য করবে এবং একদিন আমাকে একটি বই লিখতে সাহায্য করবে, বলেও জানান তিনি।

সাকিবের নির্বাচন কাভার করা নিয়ে প্রেস সচিব তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, সাকিব আল হাসানের নির্বাচন কভার করার জন্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মাগুরা ভ্রমণের ছবিগুলো ‘বাল বট বাহিনী’ এবং ‘আপা ভক্তরা’ শেয়ার করছে। তাদের মতে, আমি সাকিবের সঙ্গে পুরো একটা দিন কাটিয়েছি এবং তার নির্বাচনে অংশগ্রহণের উপর একটি দীর্ঘ গল্প লিখেছি, যার ফলাফল সন্দেহাতীত।

তিনি আরও লিখেছেন, আমরা তার প্রচারণায় তাকে অনুসরণ করেছি। এর মধ্যে, আমি ভোটারদের সাথে আলাপচারিতা করার জন্য বিভিন্ন স্থানে থেমেছি এবং প্রচারণার ছবি তুলেছি। সাকিবের পোস্টার সর্বত্র ছিল — চায়ের দোকানে, রাস্তার উপরে ঝুলছে এবং প্রতিটি দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে। অন্যান্য প্রার্থীদের- বিশেষ করে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির একজন নেতার – কয়েকটি পোস্টারও রাস্তায় দেখা যাচ্ছে, যা ৭ জানুয়ারি, ২০২৪ সালের কারচুপির নির্বাচনে বিরোধী দলের উপস্থিতির প্রতীক হিসেবে দেখা যায়।

শফিকুল আরও বলেন, আমার সাংবাদিকতা জীবনে, আমি হাজার হাজার ছবি তুলেছি। ২০১১ সালে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে যোগদানের পর থেকে আপনি যদি আমাকে ফেসবুকে অনুসরণ করে থাকেন, তাহলে আপনি আমাকে বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন চরিত্রের সঙ্গে দেখতে পাবেন। এই ভ্রমণগুলি করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। গত বছর একটি অস্থায়ী মুজিব জাদুঘরে পেঙ্গুইন জ্যাকেট পরা আমার কিছু ছবি ভাইরাল হয়েছিল। ইচ্ছাকৃতভাবে ছবি তোলার জন্য কেউ কেউ আমাকে জনসাধারণের শত্রু নম্বর ওয়ান হিসেবে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছিল।

২৭ ডিসেম্বর ফুলবাড়িয়া খেলার মাঠে সাকিবের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে সাংবাদিক শফিকুল আলম

এই পোস্টের আগে, সাকিবকে নিয়ে আরও একটি দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন শাফিকুল আলম। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সাকিবের আ. লীগে যোগদানের সিদ্ধান্ত শুধু একটি ভুল না, বরং এটি নৈতিক পরাজয় ছিল।’

দীর্ঘ ওই পোস্টে শফিকুল আলম আরও লেখেন, সাকিব আল হাসানের রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত স্বভাবতই ভুল ছিল না। প্রতিটি নাগরিকের রাজনৈতিক সক্রিয়তায় অংশগ্রহণ করার এমনকি রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ে তোলার অধিকার রয়েছে। কিন্তু মুখ্য বিষয়টি হলো তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেছেন কি না, তা নয়। বরং তিনি কার সাথে নিজেকে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা নিয়ে।

প্রেস সচিব লেখেন, যখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিল— যেমন গণহত্যা, জোরপূর্বক গুম, নির্বিচারে গ্রেফতার, বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা আইনি অভিযোগ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, পদ্ধতিগত দুর্নীতি, এমনকি ব্যাংক ডাকাতি; সাকিব নৈতিকভাবে অপ্রতিরোধ্য একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এটি কেবল একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল না, এটি ছিল কঠোর আন্তর্জাতিক তদন্তের অধীনে থাকা একটি শাসনব্যবস্থার প্রতি নীরব সমর্থন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২১-২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক মাগুরা.কম
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )

You cannot copy content of this page