1. dainikmagura@gmail.com : magura :
শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করে বোনের শ্বশুর | দৈনিক মাগুরা
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন

শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করে বোনের শ্বশুর

দৈনিক মাগুরা ডটকম
  • আপলোডের সময় : সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫
  • ২১৫ জন দেখেছেন
অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা

মাগুরার সেই শিশুটিকে একাই ধর্ষণ করেছেন তার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ। ৬ মার্চ সকালে তাঁর ছোট ছেলের (শিশুটির বোনের স্বামী) কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করেন তিনি। ধর্ষণের মামলায় দোষ স্বীকার করে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছেন মাগুরার সেই শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখ। আদালত সূত্র ও পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

গত শনিবার বিকেলে মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সব্যসাচী রায় ওই আসামির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ড করেন। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণ মামলার প্রধান এই আসামি জবানবন্দিতে বলেন, ৬ মার্চ সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে তাঁর ছোট ছেলের কক্ষে শিশুটিকে একা শুয়ে থাকতে দেখে ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। শিশুটি চিৎকার করলে তার গলা চেপে ধরেন। এতে শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর তিনি ধর্ষণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ব্লেড দিয়ে শিশুটিকে ক্ষতবিক্ষত করেন। শিশুটিকে অচেতন ফেলে রেখে মাঠে কাজ করতে চলে যান। ঘটনার সময় বাড়ির অন্য সদস্যরা যে যাঁর কাজে বেরিয়েছিলেন। আর শিশুটির বোন বাড়ির এক কোণে রান্নাঘরে মোবাইলে কথা বলায় ব্যস্ত ছিলেন।

ঘটনার কিছুক্ষণ পর শিশুটির বোন ঘরে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় প্রতিবেশী এক নারী ওই বাড়িতে আসেন। তাঁরা শিশুটিকে অচেতন দেখে তার মাথায় পানি ঢালেন। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে শিশুটির বোনের শাশুড়ি বাড়িতে এসে প্রথমে শিশুটিকে স্থানীয় এক কবিরাজের বাড়িতে নেন। সেখান থেকে নেওয়া হয় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে।

রবিবার দুপুরে মাগুরার পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা সদর থানায় সাংবাদিকদের বলেন, মামলার অন্যতম আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য তিন আসামির জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আসামির জবানবন্দির সঙ্গে মামলার বাদী শিশুটির মায়ের এজাহারের অমিল রয়েছে। বাদী বলেছিলেন, ঘটনা ঘটেছে রাতে। অবশ্য এজাহারে তিনি এ–ও উল্লেখ করেছিলেন, বিয়ের পর থেকে তাঁর বড় মেয়েকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন মেয়ের শ্বশুর। বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যরা জানতেন। এ নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে।

এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাদী উল্লেখ করেন, ৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে কিছু জটিলতার কথা জানায়। কিন্তু বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবোল বকছে। এরপর সকাল ছয়টার দিকে শিশুটি বোনকে আবার শরীর খারাপের কথা বলে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তাঁর বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তাঁর কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।

১ মার্চ মাগুরার শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি। সেদিন সন্ধ্যায় শিশুটির মরদেহ হেলিকপ্টারে করে মাগুরায় নেওয়া হয়। প্রথম জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে মামলা করেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে প্রধান আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি তিন আসামির রিমান্ড চলছে।

সূত্রঃ প্রথম আলো

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২১-২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | দৈনিক মাগুরা.কম
Theme Designed BY Kh Raad ( Frilix Group )