মাগুরায় আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রবিবার সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিনে বাদিসহ তিন জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে এসময় আসামী চার জনের সবাই উপস্থিত ছিলেন।
দেশব্যাপী আলোচিত এই ঘটনার পর মাগুরার আইনজীবীদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা হয়েছিল। আইনজীবীদের অনেকে ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁরা এই আসামীদেরকে আইন সহায়তা দেবেন না। তবে ন্যায় বিচারের স্বার্থে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে আসামীদের আইনজীবী নিয়োগের জন্য আবেদন করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী আসামীদের আবেদনের পর লিগ্যাল এইড কার্যালয় থেকে এই মামলায় আসামী পক্ষে একজন আইনজীবী নিযুক্ত করেছে। ওই আইনজীবীর নাম সোহেল আহম্মেদ। তিনি আজ আসামীদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন চার আসামি শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, বোনের স্বামী ও ভাশুর। গত ২৩ এপ্রিল এই চার আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম মুকুল সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম দিনে বাদি শিশুটির মা, জলি নামে একজন প্রতিবেশী ও রুবেল নামে এক ভ্যান চালকের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। আগামীকাল (সোমবার) মামলার তিন, চার ও পাঁচ নাম্বার সাক্ষ্যির সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির বোনের শ্বশুরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (২) ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যু) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার দ্বিতীয় অংশে (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং শাশুড়ির বিরুদ্ধে ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট) অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৩ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
গত ১ মার্চ শিশুটি নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় হেলিকপ্টারে করে মরদেহ মাগুরায় আনা হয়। জানাজার পর উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এর আগে ৮ মার্চ শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়।